নগর-সমাচার

বিগত নগরের প্রারম্ভিকীতে আমরা বলেছিলামঃ

স্মৃতি-র জন্ম দূরত্বে। “বুকের কাছে নেই তবুও, তোমার বুকেই বসত-বাটি”- টাইপ! এজন্যই, বহুদ্দিনবাদে খোলামাঠে একা দাঁড়িয়ে বুকভরা সশব্দ নিঃশ্বাসে- অস্ফুটে বলা- আহা রে! মাটির গন্ধ কী সবুজ! এ কেবল সম্ভব ইশকুল মাঠের জমা শিশির কিম্বা চেনা মফস্বলের জীর্ণতাকে ছেড়ে আসলে পরেই। “মিস্করি”- বল্বার অধিকার কেবল এক নগর-ই দিতে পারে!

প্রতিবাদের জন্ম বঞ্চনায়। বুকে তাই মুক্তির রঙ মেখে “স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক”- বলে ফেটে পড়তে জোর করে না কেউ! তবু, নূর হোসেন-রা আপনাই “হয়ে উঠতে” থাকে এই নগরের বুকেই!

জ্যামে আটকে খিস্তি করতে যাকে মোটেই ভুলিনা- প্লেনের জানালা তাকেই ক্যামন তিলোত্তমা করে তোলে! কেননা ঐ যে, মিস্করি বল্বার অভ্যেস; সে তো সেই নগরের-ই দান!

জীবনের রিলেরেস একটায় এসে বিরতি পায় চারকোনা মনিটরে! বিরতি বলতে কেবল-ই যতি; ছেদ নয় কখনোই। শুধু, ব্যাটনের হাতবদল। যে হাত স্মৃতি হাতড়ে বেড়ায়; যে হাত আবার মুঠো পাকায় প্রতিবাদে, আড্ডার টেবিলে তোলে ঝড়, লিখে রাখে না বলা কথা- “গরীব মানুষ! হাতেল্ল্যাখা খারাপ, তাই কম্প্যুটারে লিখি!” এভাবেই ক্ষণিকের হাতবদল শেষে আবারো রূদ্ধশ্বাসে ছুটে চলা! নিরন্তর! কখনো মুক্তির পানে, কখোনো ঔজ্জ্বল্য আর কখোনো সবুজ…

“…বন্ধু তোমার ভালোবাসার স্বপ্নটাকে রেখো,
বেছে নেবার স্বপ্নটাকে জাপ্টে ধরে থেকো,
দিনবদলের স্বপ্নটাকে হারিয়ে ফেলো না;
পাল্টে দেবার স্বপ্ন আমার এখনো গ্যালো না…
হাল ছেড়ো না…
হাল ছেড়ো না বন্ধু, বরং কণ্ঠ ছাড়ো জোরে . . . ”

অতঃপর…

...বুকে-পিঠে মুক্তি লিখে, "হয়ে ওঠা" নূর হোসেনদের দেখতে দেখতে নগরের আনমনা কাকেদের সময় এগিয়েছে... এদিকে সশব্দ অগোচরে আবর্জনা ঠাসা নগরটা বদলেছে। এমনই বদলেছে যে কাকেরা হয়ে উঠেছে ভূতপূর্ব কাক। বাতাসের বিষ যত ওপরে যাওয়া যায় বাড়ে বৈ কমে না। তাই নগরে তাদের ঠাঁই নেই আর.. আকাশচুম্বীর বজ্রনিরোধে যেমন নেই, সেনাআবাসের ছাদবাগানেও নেই।

একথা তো সত্যিই যে অঙ্গার হওয়া কাঁঠালগাছে নবকিশলয়ের আনাগোনা হলেও তাকে নিরুপদ্রব ওয়াচটাওয়ার বানানো যায়না। এফোঁড়-ওফোঁড় হামলে পড়ে কালো-গেরুয়ার উদ্যত মারখোর। বিশ্রান্ত ডানাগুলো তাই হয়ে ওঠে ঝঞ্ঝাদিনের রেকি সরঞ্জাম। গত জীবনের গা-এলানো ডাগআউট হয়ে ওঠে রাডারসঙ্কুল আকাশসীমা। সপ্রস্তুতি অপেক্ষাই যার নিয়তি... অপেক্ষাকালীন প্রস্তুতিই যার কাজ। বাংলায় আমরা বলি- 'বার্ডস আই ভিউ'...

সেই দেখার চোখ নিয়েই নাগরিকোত্তর এই উড়ালের সুচনা... হাল না ছাড়ারই নামান্তর বটে! তবে এবারের ফ্লাইট সিভিল এভিয়েশনের আওতায় থাকছে না...

মূলতঃ মতামত আর সাহিত্য; এই নিয়েই যাত্রারম্ভ। এমনটাই থাকছে। শাণিত হোক না হোক, বিষ্ফোরক হোক...

Nogor SamacharNogor Samachar